নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও সদস্য,দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি,প্রস্তাবিত প্রাগপুর স্থল বন্দর বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও ইনসাফ নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দীন মাস্টারের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার (১৮ অক্টোবর)। তিনি ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর ভারতের সেন্ট জনস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
প্রয়াত নাসির উদ্দীন মাস্টার কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৪৯ সালের ১৫ ই অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৫ সালে বাগোয়ান কেসিভিএন হাইস্কুল থেকে এস.এস.সি , মেহেরপুর সরকারী কলেজ থেকে এইচ.এস.সি, কুষ্টিয়া সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে বি.কম ডিগ্রী লাভ করেন।
দীর্ঘ ৩২ বছর সুনামের সাথে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের স্বনামধন্য ইনসাফনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালে কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য নির্বাচিত এবং পরে প্যানেল চেয়ারম্যান মনোনীত হন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি ইনসাফ নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সভাপতিসহ বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। নাটক লেখা ও অভিনয় ছিল তার প্রধান শখ। লেখা বই সমূহ: (১) কাগজের ফুল (২) ছিন্নশীর (৩) অ্যমবস্যার চোখে আলো (৪) বোবা মানুষ (৫) আমরাও মানুষ । উপন্যাস: (১) বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন আমু পাগল (২) বিয়ের শাড়ী।
নিজের লেখা নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন তিনি। সমাজসেবায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য তিনি দেশরত্ন পদক-২০১৭ ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য শেরে বাংলা স্মৃতি সম্মাননা পদক-২০১৭ সম্মাননা লাভ করেন। ছাত্রাবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬৫ সালে মেহেরপুর সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। ১৯৬৭ সালে পাবনা এ্যাডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে বি-কম ভর্তি হন। কলেজ ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। ১৯৬৮ সালে পাবনা এ্যাডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ছাড়পত্র নিয়ে কুষ্টিয়া সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে বি-কম ভর্তি হন। ১৯৬৯ সালে কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ ছাত্র সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালে আগরতলায় ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুকে মুক্তির জন্য পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার হন এবং ২৭ দিন কারাবন্দি ছিলেন। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সংগ্রাম কমিটি হলে তিনি রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মনোনীত হন। মুক্তিযুদ্ধকালীন রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০০ সালে দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি,২০০৩ সাল থেকে ২০২০ পর্যন্ত রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষক রাজনীতিতে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন। তিনি ছিলেন বে -সরকারী শিক্ষক সমিতির দৌলতপুর উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি, কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাবেক সদস্য। তাঁর স্ত্রী একজন গৃহিনী,বড় ছেলে মোঃ মুনজুর কবির কুষ্টিয়া সরকারী সিটি কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক, মেজ ছেলে মোঃ হুমায়ুন কবির, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার, সেজ ছেলে মোঃ নাজমুল কবির পলাশ(ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহুরুল হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ,কেন্দ্রীয় কমিটির পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন, জনতা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক, ছোট ছেলে মোঃ নিয়ামুল কবির চঞ্চল(কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ২০০২-২০১১) কুষ্টিয়া পৌরসভা স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত রয়েছেন। বড় মেয়ে মোসাঃ বিজলী খাতুন,গৃহিনী ও ছোট মেয়ে মোসাঃ শিল্পী খান, আইনজীবী এবং এসকে প্রোডাক্টস'র কর্ণধার। আমৃত্যু তিনি মানুষের কল্যাণে নিবেদিত ছিলেন। পদ্মা বিধৌত চরাঞ্চলসহ দৌলতপুর উপজেলার উন্নয়নে তাঁর অবদান অক্ষয় হয়ে থাকবে চিরকাল। দিবস টি উপলক্ষে পরিবারের উদ্যোগে আজ বাদ আছর মরহুমের কবর জিয়ারত ও স্থানীয় মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। মরহুমের জন্য সকলে দোয়া কামনা করেছেন স্বজনরা।
0 coment rios:
ধন্যবাদ, শেয়ার করুন।